সাদী মোঃ হিমেল :

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে শিক্ষাব্যবস্থার চরম অবক্ষয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষায় অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অধ্যয়নরত। কিন্তু এই বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিভিন্ন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার চরমে উঠেছে। মানবিক বিভাগে ৭৪%, সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগে ৭১%, বিজ্ঞান বিভাগে ৬৬% এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৬৯% শিক্ষার্থী স্নাতক হওয়ার পরও চাকরি পাচ্ছে না।
বেকারত্বের মূল কারণ
এই ব্যাপক বেকারত্বের মূল কারণ হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতাকে দায়ী করা যায়। শিক্ষকদের অনীহা, পাঠদানে অবহেলা,শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসার বাধ্যবাধকতা না থাকা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শিক্ষার মান ক্রমশ অবনতি হচ্ছে।
কলেজের কার্যক্রম এমন হয়ে গেছে শুধু ফরম ফিলাপ করে পরীক্ষা দিলেই চলে,কলেজে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
আরো একটি বড় সমস্যা হচ্ছে শিক্ষক স্বল্পতা। আবার এই শিক্ষক স্বল্পতা সব কলেজে নেই। এখানে একটি কথা আছে কথা আছে
“যেখানে অভাব, সেখানে যেন হাত পড়ে না,
অপ্রয়োজনেই খেলা করে বিলাসের জোয়ার।”
এই কবিতার লাইনের মত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক মিল আছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনেক কলেজে একটি বিভাগের জন্য শিক্ষক রয়েছে একজন। আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত আরেকটি কলেজের একটি বিভগের জন্য শিক্ষক রয়েছে ১৬-১৭ জন। এই ১৬-১৭ জন শিক্ষকের যে কলেজে আছে সে কলেজে ও শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসছে না।আর ১৬-১৭ জন শিক্ষক প্রয়োজনীয় নেই,অনেক শিক্ষকদেরই দুই মাসে একটি ক্লাস পায়। আর যেই কলেজে একজন শিক্ষক একটি বিভাগে । তার একার পক্ষে সম্ভব না ডিপার্টমেন্ট চালানো, ক্লাস নেওয়া। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য দরকার এর সিস্টেম পরিবর্তন। এমন করা দরকার যেখানে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসতেই হবে,শিক্ষকদের ক্লাস নিতেই হবে। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ গুলোর মধ্যে শিক্ষক সমবন্টন করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার এই সংকট নিরসনে সরকার, শিক্ষাবিদ, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী এবং ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার এই সংকট নিরসনে সরকার, শিক্ষাবিদ, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী এবং ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।